কি খাওয়াবেন আপনার ৬ মাসের শিশুটিকে?
<div class="row">
<a href="https://thedoctorsdialogue.com/weaning-of-children/" class="ml-3">https://thedoctorsdialogue.com/weaning-of-children/</a>
<div class="row ml-3">
<br/>
<p>
আমরা সবাই জানি একটি শিশু জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শুধু মাত্র মাতৃদুগ্ধ খেয়েই বড় হয়। কিন্তু ছয় মাসের পর শিশু তার বৃদ্ধির সমস্ত উপাদান যেমন ক্যালরি, ভিটামিন ও মিনারেল এর সঠিক যোগান শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ থেকে পায় না। তাই এই সময়ে মাতৃদুগ্ধের সাথে সাথে বাইরের কিছু খাবার খাওয়ান অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে। অন্নপ্রাশনের রীতি হয়ত এই বৈজ্ঞানিক কারণের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে।
</p>
<p>
সাধারণত সারাদিনে দুই থেকে তিনবার বাইরের গাঢ খাবার দিলে দেখা গেছে এই বয়সের শিশুটির পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, যে শিশু ছয় মাস ধরে পাতলা তরল স্তনদুগ্ধ পান করে এসেছে তাকে রাতারাতি গাড় খাবারে অভ্যস্ত করা বেশ কঠিন। তাই এই অভ্যাসটি খুব ধীরে ধীরে পরিবর্তন করাতে হবে।
</p>
<p>
এই বার আসা যাক শিশুটি কি খাবে সেই বিষয়ে। আর্থসামাজিক ও ধর্মীয় রীতি মেনে শিশুটির খাবার ঠিক করা বাঞ্ছনীয়। খাবারের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট ,প্রোটিন, ফ্যাট , ভিটামিন ও মিনারেল যেন সুষম ভাবে থাকে।
</p>
<p>
সাধারণভাবে খিচুড়ি যেটি কিনা চালডাল সবজি দিয়ে খুব নরম ভাবে তৈরি হয়, তার সাথে অল্প একটু ঘী অথবা মাখন দিয়ে দিলে সেটি সুষম আর পুষ্টিকর খাবারে পরিণত হয়। মনে রাখতে হবে যে সবজিটি ব্যবহার হবে সেটি ছিবড়ে যুক্ত না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। নরম সবজি যেমন লাউ পেঁপে কুমড়ো পালং শাক ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। খাবারের মধ্যে একটি রঙিন সবজি যেমন গাজর,কুমড়ো,টমাট ইত্যাদি থাকলে ভালো হয়। অসময়ের সবজি ব্যবহার না করাই ভাল। খিচুড়ি ছাড়াও গলা ভাত,সুজি, চিঁড়েসেদ্ধ,পাকা কলা, ফলের রস ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে ।
</p>
<p>
সাধারণত দুধ ছাড়া অন্য প্রাণিজ প্রোটিন ৮-৯ মাসের পরে দেওয়াই ভালো। দেখা গেছে খুব তাড়াতাড়ি প্রাণিজ প্রোটিন শুরু করার সাথে ভবিষ্যতে শিশুর এলার্জির প্রবণতার একটা সরাসরি সম্পর্ক আছে। তাই মাছ ডিম মাংস দিতে হলে তা ৮-৯ মাস এর পরেই শুরু করুন।
</p>
<p>
এইবার স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে খাওয়াবেন কিভাবে? কোলে বসিয়ে অথবা অন্য কোন জায়গায় বসিয়ে পিঠে কিছু ঠেক দিয়ে চামচ বাটিতে খাওয়ানোই সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত। এতে করে খাওয়ার শ্বাসনালিতে যাওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়। ফিডার অথবা গোঁদল দিয়ে শুইয়ে গাঢ় খাবার না খাওয়ানোই উচিৎ। এগুলিতে খাবার শ্বাসনালীতে ঢুকে বিষম লাগার সম্ভাবনা যেমন থাকে পাশাপাশি বারবার পেটের গন্ডগোল এর সমস্যা,কানে ইনফেকশান ইত্যাদি হতে পারে।
</p>
<p>
শিশুটিকে খাওয়ানোর আগে বাটি ও চামচ গরম জলে ফুটিয়ে নিলেই ভালো হয় । আর খাওয়ানোর আগে হাত অবশ্যই সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ধুতে ভুলবেন না।
</p>
<p>
শিশুটিকে খাওয়ানোর জন্য যে জল ব্যবহার করবেন সেটি ১০-১৫মিনিট ফোটানো প্রয়োজন। এতে করে জলবাহিত রোগ হওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়।
</p>
<p>
আরেকটা কথা বলা ভীষন জরুরী সেটা হল কখনোই শিশুটিকে জোর করে,ইচ্ছার বিরুদ্ধে খাওয়াবেন না। চেষ্টা করুন খিদে পেলে তবেই খাওয়াতে। তা না হলে জোর করার ফলে খাওয়া জিনিস টার উপরেই শিশুটির ভীতি তৈরি হতে পারে। কাঁদতে কাঁদতে খেলে খাবার শ্বাসনালীতে চলে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে। খাবার সময় কখনোই মোবাইল ,কার্টুন ,টিভি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এমন জায়গায় খাওয়ান যেখানে ডাইভারশন একটু কম থাকে ও শিশুটির মনোযোগ কেবল খাবারের দিকেই থাকে। শিশুটিকে গল্প বলতে বলতে বা গান করতে করতে খাওয়ানো যেতে পারে।
</p>
<p>
বিভিন্ন মানুষের পছন্দ যেমন বিভিন্ন রকমের হয় ঠিক একইভাবে বিভিন্ন শিশুর স্বাদের পছন্দও বিভিন্ন হয়। আপনার শিশুটি মিষ্টি, টক, নোনতা কোনটি পছন্দ করে তা আপনাকে সবগুলির ট্রায়াল দিয়ে দেখতে হবে। সাধারণভাবে ছোটরা মিষ্টি পছন্দ করে তবে এর ব্যতিক্রম আছে। কোন খাবার শুরু করলে অন্তত দুই সপ্তাহ ওই খাবারটি চালিয়ে যান যদি দেখেন তারপরও শিশুটি খেতে চাইছে না তখন বুঝবেন শিশুটির ওই স্বাদ টি পছন্দ নয়। তখন অন্য খাওয়ার এর কথা ভাবুন। কোন বিশেষ স্বাদে জীভটি সংবেদনশীল হতে প্রায় দু সপ্তাহ লেগে যায়। আর জীভটি ওই খাবারে সংবেদনশীল হলে তবেই শিশুটি ওই খাবার ভালবেসে খাবার প্রশ্ন আসে। বাইরের খাবার শুরুর এই পরীক্ষায় আপনি পাস করলেন কিনা, তার মাপকাঠি কিন্তু শিশুটির ওজন বৃদ্ধি। যদি দেখেন ওজন ঠিক বাড়ছে না, তবে অবশ্যই ডাক্তার বাবুর সাথে যোগাযোগ করুন।
</p>
<p>
আর একটা কথা যেটা নিয়ে মাদের অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন আমাদের হতে হয় “সেটা হল ফর্মুলা মিল্ক ও বেবি ফুড”। একটা কথাই বলি যদি সময়সব প্রাকৃতিক খাদ্য সুষম ভাবে দেওয়া যায় সেটাই সবচেয়ে বেশি কা্র্যকরী। আমি মায়েদের একটা কথাই বলি,বাড়িতে একটি ফর্মুলা মিল্ক বা বেবি ফুড রেখে দিতেই পারেন যেদিন আপনি খুব বেশি ব্যস্ত থাকবেন সেদিনের জন্যে। অথবা বাইরে কোথাও বেড়াতে গেছেন, যখন আপনার হাতে সময় বা সুযোগ নেই খাবার তৈরি করে দেওয়ার, সেদিন আপনি এই ফর্মুলা মিল্ক অথবা বেবি ফুডগুলি ব্যবহার করতে পারেন। তবে ফর্মুলা মিল্ক ও বেবি ফুড ব্যবহার না করাই ভালো।
</p>
<p>
চেষ্টা করুন কাজের মহিলার ওপর সন্তানকে খাওয়ানোর দায়িত্ব না দিয়ে নিজে হাতে খাওয়াতে। এতে শিশুটি যেমন খুশি হয়ে খায় ,আর সন্তানের সাথে একটা ইমোশনাল বন্ডিং তৈরী হয়,যেটি শিশুটির মানসিক ওশারীরিক বিকাশে সাহায্য করে।
</p>
</div>
</div>
কি খাওয়াবেন আপনার ৬ মাসের শিশুটিকে?
আমরা সবাই জানি একটি শিশু জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শুধু মাত্র মাতৃদুগ্ধ খেয়েই বড় হয়। কিন্তু ছয় মাসের পর শিশু তার বৃদ্ধির সমস্ত উপাদান যেমন ক্যালরি, ভিটামিন ও মিনারেল এর সঠিক যোগান শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ থেকে পায় না। তাই এই সময়ে মাতৃদুগ্ধের সাথে সাথে বাইরের কিছু খাবার খাওয়ান অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে। অন্নপ্রাশনের রীতি হয়ত এই বৈজ্ঞানিক কারণের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে।
সাধারণত সারাদিনে দুই থেকে তিনবার বাইরের গাঢ খাবার দিলে দেখা গেছে এই বয়সের শিশুটির পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, যে শিশু ছয় মাস ধরে পাতলা তরল স্তনদুগ্ধ পান করে এসেছে তাকে রাতারাতি গাড় খাবারে অভ্যস্ত করা বেশ কঠিন। তাই এই অভ্যাসটি খুব ধীরে ধীরে পরিবর্তন করাতে হবে।
এই বার আসা যাক শিশুটি কি খাবে সেই বিষয়ে। আর্থসামাজিক ও ধর্মীয় রীতি মেনে শিশুটির খাবার ঠিক করা বাঞ্ছনীয়। খাবারের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট ,প্রোটিন, ফ্যাট , ভিটামিন ও মিনারেল যেন সুষম ভাবে থাকে।
সাধারণভাবে খিচুড়ি যেটি কিনা চালডাল সবজি দিয়ে খুব নরম ভাবে তৈরি হয়, তার সাথে অল্প একটু ঘী অথবা মাখন দিয়ে দিলে সেটি সুষম আর পুষ্টিকর খাবারে পরিণত হয়। মনে রাখতে হবে যে সবজিটি ব্যবহার হবে সেটি ছিবড়ে যুক্ত না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। নরম সবজি যেমন লাউ পেঁপে কুমড়ো পালং শাক ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। খাবারের মধ্যে একটি রঙিন সবজি যেমন গাজর,কুমড়ো,টমাট ইত্যাদি থাকলে ভালো হয়। অসময়ের সবজি ব্যবহার না করাই ভাল। খিচুড়ি ছাড়াও গলা ভাত,সুজি, চিঁড়েসেদ্ধ,পাকা কলা, ফলের রস ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে ।
সাধারণত দুধ ছাড়া অন্য প্রাণিজ প্রোটিন ৮-৯ মাসের পরে দেওয়াই ভালো। দেখা গেছে খুব তাড়াতাড়ি প্রাণিজ প্রোটিন শুরু করার সাথে ভবিষ্যতে শিশুর এলার্জির প্রবণতার একটা সরাসরি সম্পর্ক আছে। তাই মাছ ডিম মাংস দিতে হলে তা ৮-৯ মাস এর পরেই শুরু করুন।
এইবার স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে খাওয়াবেন কিভাবে? কোলে বসিয়ে অথবা অন্য কোন জায়গায় বসিয়ে পিঠে কিছু ঠেক দিয়ে চামচ বাটিতে খাওয়ানোই সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত। এতে করে খাওয়ার শ্বাসনালিতে যাওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়। ফিডার অথবা গোঁদল দিয়ে শুইয়ে গাঢ় খাবার না খাওয়ানোই উচিৎ। এগুলিতে খাবার শ্বাসনালীতে ঢুকে বিষম লাগার সম্ভাবনা যেমন থাকে পাশাপাশি বারবার পেটের গন্ডগোল এর সমস্যা,কানে ইনফেকশান ইত্যাদি হতে পারে।
শিশুটিকে খাওয়ানোর আগে বাটি ও চামচ গরম জলে ফুটিয়ে নিলেই ভালো হয় । আর খাওয়ানোর আগে হাত অবশ্যই সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ধুতে ভুলবেন না।
শিশুটিকে খাওয়ানোর জন্য যে জল ব্যবহার করবেন সেটি ১০-১৫মিনিট ফোটানো প্রয়োজন। এতে করে জলবাহিত রোগ হওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়।
আরেকটা কথা বলা ভীষন জরুরী সেটা হল কখনোই শিশুটিকে জোর করে,ইচ্ছার বিরুদ্ধে খাওয়াবেন না। চেষ্টা করুন খিদে পেলে তবেই খাওয়াতে। তা না হলে জোর করার ফলে খাওয়া জিনিস টার উপরেই শিশুটির ভীতি তৈরি হতে পারে। কাঁদতে কাঁদতে খেলে খাবার শ্বাসনালীতে চলে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে। খাবার সময় কখনোই মোবাইল ,কার্টুন ,টিভি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এমন জায়গায় খাওয়ান যেখানে ডাইভারশন একটু কম থাকে ও শিশুটির মনোযোগ কেবল খাবারের দিকেই থাকে। শিশুটিকে গল্প বলতে বলতে বা গান করতে করতে খাওয়ানো যেতে পারে।
বিভিন্ন মানুষের পছন্দ যেমন বিভিন্ন রকমের হয় ঠিক একইভাবে বিভিন্ন শিশুর স্বাদের পছন্দও বিভিন্ন হয়। আপনার শিশুটি মিষ্টি, টক, নোনতা কোনটি পছন্দ করে তা আপনাকে সবগুলির ট্রায়াল দিয়ে দেখতে হবে। সাধারণভাবে ছোটরা মিষ্টি পছন্দ করে তবে এর ব্যতিক্রম আছে। কোন খাবার শুরু করলে অন্তত দুই সপ্তাহ ওই খাবারটি চালিয়ে যান যদি দেখেন তারপরও শিশুটি খেতে চাইছে না তখন বুঝবেন শিশুটির ওই স্বাদ টি পছন্দ নয়। তখন অন্য খাওয়ার এর কথা ভাবুন। কোন বিশেষ স্বাদে জীভটি সংবেদনশীল হতে প্রায় দু সপ্তাহ লেগে যায়। আর জীভটি ওই খাবারে সংবেদনশীল হলে তবেই শিশুটি ওই খাবার ভালবেসে খাবার প্রশ্ন আসে। বাইরের খাবার শুরুর এই পরীক্ষায় আপনি পাস করলেন কিনা, তার মাপকাঠি কিন্তু শিশুটির ওজন বৃদ্ধি। যদি দেখেন ওজন ঠিক বাড়ছে না, তবে অবশ্যই ডাক্তার বাবুর সাথে যোগাযোগ করুন।
আর একটা কথা যেটা নিয়ে মাদের অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন আমাদের হতে হয় “সেটা হল ফর্মুলা মিল্ক ও বেবি ফুড”। একটা কথাই বলি যদি সময়সব প্রাকৃতিক খাদ্য সুষম ভাবে দেওয়া যায় সেটাই সবচেয়ে বেশি কা্র্যকরী। আমি মায়েদের একটা কথাই বলি,বাড়িতে একটি ফর্মুলা মিল্ক বা বেবি ফুড রেখে দিতেই পারেন যেদিন আপনি খুব বেশি ব্যস্ত থাকবেন সেদিনের জন্যে। অথবা বাইরে কোথাও বেড়াতে গেছেন, যখন আপনার হাতে সময় বা সুযোগ নেই খাবার তৈরি করে দেওয়ার, সেদিন আপনি এই ফর্মুলা মিল্ক অথবা বেবি ফুডগুলি ব্যবহার করতে পারেন। তবে ফর্মুলা মিল্ক ও বেবি ফুড ব্যবহার না করাই ভালো।
চেষ্টা করুন কাজের মহিলার ওপর সন্তানকে খাওয়ানোর দায়িত্ব না দিয়ে নিজে হাতে খাওয়াতে। এতে শিশুটি যেমন খুশি হয়ে খায় ,আর সন্তানের সাথে একটা ইমোশনাল বন্ডিং তৈরী হয়,যেটি শিশুটির মানসিক ওশারীরিক বিকাশে সাহায্য করে।
Views
- 1019 Total Views
- 1019 Website Views
- 0 Embedded Views
Actions
- 0 Social Shares
- 1 Likes
- 0 Dislikes
- 0 Comments
Share count
- 0 Facebook
- Twitter
- 0 LinkedIn
- 0 Google+